একনেক সভায় ‘ডুয়েটের গবেষণাগারসমূহের সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ আধুনিকায়ন এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প অনুমোদন
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)-এর আজকের সভায় ‘ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট), গাজীপুর-এর গবেষণাগারসমূহের সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ আধুনিকায়ন এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন (M-DUET)’ শীর্ষক প্রকল্প চুড়ান্তভাবে অনুমোদিত হয়েছে। জুলাই ২০২৫ থেকে জুন ২০২৯ পর্যন্ত চার বছর মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। বহুল প্রত্যাশিত এ প্রকল্প অনুমোদন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী মাইলফলক।
আজ বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর পরিকল্পনা কমিশন চত্বরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রকল্প অনুমোদনের পর ডুয়েটে আয়োজিত সংবর্ধনায় মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘ডুয়েটের গবেষণা কার্যক্রমকে বিশ্বমানের ও উদ্ভাবনমুখী করে গড়ে তোলার জন্য এই প্রকল্প একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ডুয়েটের গবেষণাগারসমূহ আধুনিকায়নের মাধ্যমে আমাদের শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মানের গবেষণার সুযোগ পাবে। একই সঙ্গে দক্ষ প্রকৌশলী তৈরির ক্ষেত্রে ডুয়েট আরও শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। আমি মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং মাননীয় পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, মাননীয় শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার এবং অন্যান্য উপদেষ্টা মহোদয়কে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই। একই সঙ্গে প্রকল্প প্রস্তাবনা প্রস্তুতকরণের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং ডুয়েটের এলামনাইবৃন্দ ও সকল শুভাকাঙ্খীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। মানসম্মত শিক্ষা ও গবেষণা নিশ্চিত করা, শিক্ষানুরাগী শিক্ষক, আধুনিক শ্রেণিকক্ষ, উন্নত গবেষণা অবকাঠামো তৈরি, টেকসই আবাসন সুবিধা, বৈশ্বিক বাজারে কর্মসংস্থানের উপযোগী করে মানবসম্পদ তৈরি ও বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভাবনমুখী পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে অনুমোদিত এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ডুয়েট হবে দেশের প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিষয়ক উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র।’
উপাচার্য মহোদয় আরও বলেন, ‘ডুয়েট দেশের টেকসই উন্নয়ন, উদ্ভাবন ও শিল্পায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। প্রযুক্তির দ্রæত পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মেলাতে গবেষণাগার ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে ডুয়েটের সক্ষমতা উন্নয়ন জরুরি। আমরা আশা করছি, আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্বের নেতৃত্বে অংশ নিতে পারবে আমাদের শিক্ষার্থীরা।’ তিনি বলেন, ‘প্রায় ৩৫০০ শিক্ষার্থীর জন্য গবেষণাগার আধুনিকায়ন, একাডেমিক ও ল্যাবরেটরি ভবন নির্মাণ, নতুন ১৬০০ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন সুবিধা এবং নিরাপত্তা ও আন্তঃক্যাম্পাস যোগাযোগের উন্নয়নই এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য।’ তিনি ডুয়েটের অগ্রযাত্রায় শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সকলকে শিক্ষা, বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তিগত গবেষণা, প্রকাশনাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রাণপ্রিয় ডুয়েট ও দেশের টেকসই উন্নয়নে ভূমিকা রাখার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।
মাননীয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আরেফিন কাওসার তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘এই প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে আধুনিক বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ও স্থাপনায় সমৃদ্ধ হয়ে ডুয়েট হয়ে উঠবে একটি গবেষণার আদর্শ সুতিকাগার। তিনি মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় এবং মাননীয় পরিকল্পনা উপদেষ্টা ও শিক্ষা উপদেষ্টা মহোদয় এবং প্রকল্প অনুমোদনের সঙ্গে জড়িত সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উদ্যোগে এবং বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) ও ডুয়েটের যৌথ বাস্তবায়নে প্রকল্পটি সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়িত হবে। একনেক সভায় প্রকল্প অনুমোদনের সংবাদে ডুয়েটে সর্বস্তরে এক আনন্দমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এই উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতিসহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপাচার্য মহোদয়কে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।