ডুয়েটে ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস উদযাপিত
বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট), গাজীপুর-এ ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস- ২০২২ উদ্যাপিত হয়। দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে আজ সোমবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে 'প্রগতিশীল প্রযুক্তি/ অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নতি'-এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের দেয়ালে স্থাপিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এরপর শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম একাডেমিক ভবনে স্মার্ট ক্লাসরুম উদ্বোধন ও হস্তান্তর করা হয়। এ সময় এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে ১০ টি স্মার্ট ক্লাস রুমের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. হাবিবুর রহমান। তিনি স্মার্ট ক্লাস রুম ব্যবহারের বিভিন্ন সুবিধা উল্লেখ করে বলেন, এতে করে ছাত্র শিক্ষক সকলেই উপকৃত হবেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুর রশীদ, পরিচালক (ছাত্রকল্যাণ) অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম, রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. হিমাংশু ভৌমিক।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আহ্সান উল্লাহ মাস্টার অডিটোরিয়ামে স্থাপিত জায়ান্ট স্ক্রীনে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিষয়ে ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, বিভিন্ন অনুষদের ডীনবৃন্দ, বিভাগীয় প্রধানগণ, পরিচালক, রেজিস্ট্রার (অ. দা.), অফিস প্রধান এবং শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
দিবসটি উপলক্ষ্যে বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩১১ নং সেমিনার কক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (কম্পিউটার সেন্টার) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুর রউফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. হাবিবুর রহমান এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুর রশীদ। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধু সবসময় বাঙালি জাতিকে বিজ্ঞানমনষ্ক ও শিক্ষিত করে তোলার প্রচেষ্টা করেছেন। তাঁর আদর্শকে ধারণ করে বর্তমান সরকার তথ্য ও প্রযুক্তির মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশের সকল কার্যক্রম পরিচালনার ধারা অব্যাহত রেখেছেন। এতে কর্মক্ষেত্রে নানা অসুবিধাগুলো দূর হয়ে সময়, শ্রম লাঘব হচ্ছে। প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় শিল্প বিপ্লবে যেসকল প্রতিবন্ধকতা ছিল তা কাটিয়ে উঠে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কারণে ডিজিটাল সক্ষমতা সৃষ্টি ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগের সুবিধা তৈরি হওয়ায় আমরা বৈশ্বিক পরিমন্ডলে নিজেদের দক্ষতা ও যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখার সুযোগ তৈরি হয়েছে। তিনি বর্তমান সরকারের ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের ঘোষণা ও করোনাকালীন সময়ে সকল কার্যক্রম অনলাইনে পরিচালনার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা এবং তাঁর সুযোগ্য পুত্র, আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা ও আর্কিটেক অব ডিজিটাল বাংলাদেশ সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। এছাড়া তিনি বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে নতুন প্রজন্মসহ সকলকে আউটকাম বেইজ এডুকেশন ও নলেজ বেইজ সোসাইটি বিনির্মাণে একযোগে কাজ করার আহবান জানান। তিনি আরও বলেন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন করে আমরা উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হলেও নৈতিক শিক্ষা ও শুদ্ধাচার চর্চা না করলে উন্নয়ন ধরে রাখা সম্ভব হবে না। বিজয়ের এই মাসে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাসহ ১৪ ডিসেম্বরের সকল শহীদ বুদ্ধিজীবি ও মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদের প্রতি এবং ১৫ আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ও তাঁদের পরিবারের শাহাদাত বরণকারী সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাসহ জাতীয় চার নেতার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান।
অনুষ্ঠানে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুর রশীদ বলেন, বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশের কল্যাণে আমরা ই-কমার্স, টেলি-মেডিসিন, ই-ব্যাংকিংসহ নানা রকম ই-সার্ভিস পাচ্ছি, যা বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রভাব রাখছে। এসময় তিনি অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি দূর্নীতি হ্রাস ও দারিদ্র বিমোচন উপর গুরুত্বারোপ করেন।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে সীমিত সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন। ডিজিটালাইজেশনের এই যুগে তিনি ইতিবাচক সংস্কৃতি চর্চার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
সভায় বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ ও উন্নয়নের বিভিন্ন কার্যক্রমের ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ওবায়দুর রহমান। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইসিটি) সেলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ফজলুল হাসান সিদ্দিকী সরকারের ভিশন-মিশন ও ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ডুয়েটের সকল কার্যক্রম কিভাবে ডিজিটালাইজড করা হচ্ছে তা উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আইসিটি সেলের প্রোগ্রামার ইঞ্জিনিয়ার সোলাইমান আহমেদ।