ডুয়েটে তিনদিন ব্যাপী আন্তর্জাতিক কনফারেন্স শুরু
ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট), গাজীপুর-এ আজ বুধবার (২৯ মে, ২০২৪ খ্রি.) ‘মেকানিক্যাল, ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যান্ড প্রোসেস ইঞ্জিনিয়ারিং (আইসিএমএমপিই-২০২৪)’ শীর্ষক তিনদিন ব্যাপী আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের উদ্বোধন করা হয়।
মেকানিক্যাল, ম্যানুফ্যাকচারিং, এনার্জি, টেক্সটাইল, ফুড, কেমিক্যাল এবং প্রোসেস ইঞ্জিনিয়ারিং-এ অধিকতর গবেষণা ও উদ্ভাবনকে লক্ষ্য রেখে আজ সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার অডিটোরিয়ামে যন্ত্রকৌশল অনুষদের উদ্যোগে এ আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের উদ্বোধন করেন কনফারেন্সের প্রধান পৃষ্ঠপোষক অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. হাবিবুর রহমান।
তিনি বলেন, আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে প্রবেশ করেছি। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব প্রযুক্তিগত রূপান্তরের মধ্য দিয়ে একটি নতুন যুগের সূচনা করেছে, যা ন্যানোটেকনোলজি, শক্তি সঞ্চয়, বৈদ্যুতিক যানবাহন, রোবোটিক্স এবং স্মার্ট টেক্সটাইলগুলির মতো প্রযুক্তির উৎকর্ষতা ও বিকাশের মাধ্যমে বিশ্বকে সমৃদ্ধ করছে। আমাদের দেশে এই খাতসমূহের অধিকতর উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটাতে এবং বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার অপার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আমাদের অবশ্যই ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জগুলিকে মোকাবেলা করে জলবায়ু পরিবর্তন, সম্পদের ঘাটতি এবং টেকসই উন্নয়নের মতো বিষয়সমূহের সমন্বিত গবেষণা প্রচেষ্টা, সহযোগিতা এবং জ্ঞান আদান-প্রদানসহ সম্মিলিত পদক্ষেপের মাধ্যমে স্মার্ট, আরো টেকসই বাংলাদেশ গড়ে তোলার পথকে প্রশস্ত করতে হবে। তিনি এই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উৎকর্ষতা সাধনে মেকাট্রনিক্স, ন্যানোটেকনোলজি, নতুন নতুন ম্যাটেরিয়াল উদ্ভাবন এবং কম্পিউটার এইডেড ডিজাইনসহ বিভিন্ন ধরনের উদ্ভাবনের সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে সমস্যাগুলোকে সমাধান করে যন্ত্রকৌশল অনুষদের প্রকৌশলীদের দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহবান জানান। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের মাধ্যমে যে দৃষ্টান্ত সারা বিশ্বে স্থাপন করেছেন, তা জাতি হিসেবে আমাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে। নিজেদের শক্তিতে যে নিজেদের উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব তা পদ্মাসেতুর সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়াও বর্তমান সরকার ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল, সড়ক-মহাসড়ক নির্মাণ, গভীর সমুদ্র বন্দর, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ প্রকল্প, আইসিটি খাতের উন্নয়ন, তেল, গ্যাস, কয়লা, প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণসহ এ ধরনের আরো অনেক কাজ করে যাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে নতুন নতুন গবেষণা ও উদ্ভাবনের জন্য শিক্ষক, গবেষক, উদ্ভাবক ও শিল্প উদ্যোক্তাসহ সকলকে উপাচার্য একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান। এছাড়া তিনি ১৫ আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ও তাঁদের পরিবারের শাহাদাত বরণকারী সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাসহ জাতীয় চার নেতা এবং মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান।
যন্ত্রকৌশল অনুষদের ডীন ও কনফারেন্স চেয়ার অধ্যাপক ড. মো. আরেফিন কাওসারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কী নোট স্পিকার হিসেবে বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান এবং অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি সিডনির অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন যন্ত্রকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও কনফারেন্সের অরগানাইজিং সেক্রেটাারি অধ্যাপক ড. হিমাংশু ভৌমিক, কনফারেন্স সেক্রেটারি ও ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, কনফারেন্সের টেকনিক্যাল চেয়ার ও পরিচালক (গবেষণা ও সম্প্রসারণ) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান চৌধুরী, কনফারেন্সের সহযোগী সেক্রেটারি ও যন্ত্রকৌশল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. রাশেদ মিয়া।
তিনদিন ব্যাপী আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে বিভিন্ন বিষয়ে মোট ৯৮ টির অধিক টেকনিক্যাল পেপার, কী নোট বক্তৃতা, ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাকাডেমিক কোলাবোরেশন ইত্যাদি উপস্থাপিত হচ্ছে। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডীন, বিভাগীয় প্রধান, পরিচালক এবং শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীবৃন্দসহ দেশ-বিদেশের শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী ও গবেষকগণ অংশগ্রহণ করেন।